ক্রেডিট কার্ড এই সময়ের অনেকের নিত্যসঙ্গী। ‘ঘোরো-কেনো- খাও… পরে টাকা দাও’, এটাই ক্রেডিটকার্ড ব্যবহারের মোদ্যা কথা। পকেটে টাকা নিয়ে ঘোরার দিন অনেক আগেই গত হয়েছে এই ক্রেডিট কার্ডের বদৌলতে। দিন দিন এর সেবার পরিধি বাড়েছে। সবশেষ বলা হচ্ছে- আপনার ক্রেডিট কার্ডটি কাজ করবে মিনি কম্পিউটারের মতো। প্রশ্ন উঠবেই- কিভাবে? উত্তর এক বা দুইভাবে নয় ছয়ভাবে এর উপকার পাওয়া যাবে, যা কেবল কম্পিউটারেই পাওয়া সম্ভব।
বলা হচ্ছে, এই ক্রেডিট কার্ড আর সাধারণ একটি প্লাস্টিক কার্ড হয়ে থাকছে না, মিনি কম্পিউটার হয়ে স্থান করে নেবে আপনার ওয়ালেটে। আর তাতে আপনার টাকা পরিশোধ যেমন হবে আরও নিরাপদ, তেমনি এখন যেমন একাধিক কার্ড পকেটে নিয়ে ঘুরতে হয় তারও প্রয়োজন হবে না।
নতুন এই কার্ড বাজারে আনছে মানি মেইল। ডিজাইন করছে মাস্টারকার্ড। ভবিষ্যতের জন্য ছয় ধরনের সার্ভিস নিয়ে আসছে তারা।
এক…ব্যালান্স দেখাবে কার্ড নিজেই
আপনার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে তা জানতেও কার্ড এটিএমে চার্জ করতে হয়। কিন্তু নতুন কার্ডই বলে দেবে ব্যালান্স কত। মাস্টার কার্ডের এই ডিজাইনে ডান দিকের উপরের কোনায় ভাসবে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স। মিনি ক্যালকুলেটরের যেমন স্ক্রিন থাকে এটি ঠিক তেমন।
ভিতু ব্যবহারকারীরা ভাবতে পারেন এই ডিসপ্লে থেকে অন্যরা ব্যালান্স দেখে ফেলবে, সে ভয় থেকে মুক্ত থাকতে ডিসপ্লেটি আপনি পিন কোড ব্যবহার করে নিজেই অফ-অন করতে পারবেন।
এই সুবিধা দিলেও কার্ডটি কিন্তু থেকে যাচ্ছে আগের মতোই পাতলা। এর ভেতরে যে ব্যাটারি বসছে তাতে মাপের কোনও হেরফের হচ্ছে না।
দুই…আঙুলের ছাপে খুলুন তালা
কার্ডটিতে একটি অতিরিক্ত স্তর সংযোজিত হচ্ছে যা আপনাকে প্রতারকদের হাত থেকে বাঁচাবে। চুরি করেও থাকবে না ফায়দা। কারণ ওটিতে আপনার আঙুলের ছোঁয়া না পেলে খুলবেই না। কার্ডের ওপর একটি ছোট্ট প্যাড রয়েছে ওটিতে পরিচিত আঙুলের ছোঁয়া পেলে তবেই তালা খুলবে কার্ডের।
আপনি শপিং করতে চাইলেও এই একই ব্যবস্থা। তবে স্ক্যানারে সোয়াইপ করে পিন নম্বর দিলে তা কাজ করবে। আর ক্যাশ মেশিনে আঙুলের ছাপ থাকলেই হবে না, পিন নম্বরটিও ইনসার্ট করতে হবে।
তিন…পাউন্ড ডলারে পরিশোধ
আপনি যখন বিদেশ ভ্রমণে তখন একাধিক কার্ড বহন করার আর প্রয়োজন হবে না। এই কার্ডে আপনার মুদ্রার ধরণ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে। সামনেই কয়েকটি বোতাম টিপলে আপনি অনায়াসে পছন্দ মতো ডলার কিংবা পাউন্ড নির্ধারণ করে নিতে পারবেন। যে ধরণের মুদ্রা নির্ধারণ করা হবে তার সিগন্যাল জ্বলবে কার্ডের উপরে। সুতরাং যখন আপনি নিউইয়র্কে তখন ডলার আর লন্ডনে হলে পাউন্ডেই খরচ করতে পারবেন। এতে মুদ্রা বিনিময়ের খরচ বাঁচবে যার পরিমানও নেহায়েতে কম নয়।
চার…ডেবিট ক্রেডিট দুই সুবিধা
অনেক ব্যাংকই তাদের খদ্দেরকে দুই ধরনের কার্ড দেয় ডেবিট ও ক্রেডিট। তাদের আবার সেভিংস অ্যাকাউন্টস কার্ডও থাকে। এছাড়াও, কারো কারো একই ব্যাংকে ব্যবসাসংক্রান্ত ও ব্যক্তিগত দুই ধরনের হিসাবও বজায় রাখতে হয়। এই বিশেষ কার্ড থাকলে একটিতে চলবে। কাস্টমার তার প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহারের সময় একেকটি নির্ধারণ করে নেবে। আর কেনাকাটা শেষ হলে কার্ডটি সয়ংক্রিয়ভাবেই পরের ট্রাঞ্জেকশনের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকবে।
পাঁচ…লুকানো কার্ড নম্বর
সব ক্রেডিট কার্ডেই এর নম্বরটি দেখা যায়। কিন্তু এই মিনি কম্পিউটার কার্ডে তা থাকবে আংশিক লুকনো। ১৬ ডিজিটের নম্বরের কয়েকটি হতে পারে ৮ কিংবা ৪টি ডিজিট আপনি অদৃশ্য করে রাখতে পারবেন। এ থেকে ই পর্যন্ত বর্ণগুলো দিয়ে আপনি একটি কোড তৈরি করে রাখলে সেটি ঢোকালেই পুরো নম্বরটি দেখা যাবে। ভুল কোড ঢোকানো হলে কার্ড লক্ড হয়ে যাবে। আর কেনা শেষ হওয়া মাত্র কার্ড নিজেই আবার নম্বর লুকিয়ে ফেলবে।
ছয়…বিশেষ সিকিউরিটি কোড
এই কার্ডে রয়েছে একটি বিশেষ নিরাপত্তা কোড। অনলাইনে কেনাকাটার সময় টেলিফোনে আপনাকে সাধারণত কোডের শেষ তিনটি ডিজিট জানতে চাওয়া হয়। স্মৃতি থেকেই তা বলতে হয়। এই কার্ডে কোডের শেষ তিনটি ডিজিট স্ক্রিনেই ভেসে উঠবে। তবে এই নম্বরটি কয়েক ঘণ্টা পরপরই পাল্টে যাবে যাতে কোনও প্রতারক এ থেকে প্রতারণা করতে না পারে।




































