জামিল আহমেদের ‘ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি’ নিয়ে ফারুকীর অভিযোগ

 

chardike-ad

 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে একচেটিয়া চলছে শিল্পকলার মহাপরিচালক পদ থেকে নাটকীয় পদত্যাগের নায়ক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ প্রসঙ্গ। প্রায় সিংহভাগ মানুষই জামিল আহমেদের অভিযোগগুলো বিশ্বাস করেছেন ও পাশে দাঁড়িয়েছেন এমন সিদ্ধান্তের।

অন্যদিকে জামিলের অভিযোগের আঙুল মূলত যার দিকে তোলা, সেই নির্মাতা তথা উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও বাকপটু কম নন। কিংবা অভিযোগ হজম করে চুপচাপ বসে থাকতে অভ্যস্ত নন। ফলত, শনিবার (১ মার্চ) সকাল সকাল ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট নিয়ে হাজির ফারুকী। তাও আবার জানিয়ে দিলেন এই বলে, এটি ভূমিকা বা ট্রেলার। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তুলে ধরবেন দিনের (শনিবার) অনেকগুলো কাজ শেষ করে। ট্রেলারে এটুকুও জানান দেন, মূল সিনেমা (লেখায়) দেখে বিব্রত হতে পারেন জামিল আহমেদ!

জামিল ইস্যুতে ফারুকীর লিখিত ট্রেলার হুবহু তুলে ধরা হলো-

সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনও পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম যায় যায় দিনের এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাগাজিন মৌচাকে ঢিলের জন্য। এর পরেও বাংলা-ইংরেজি অনেক কাগজে লিখেছি। এখনও আমি তাঁকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কয়দিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশী রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে।

কিন্তু ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুইরকম আর্ট। দ্বিতীয় কাজটা করবার জন্য লাগে ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি। কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেয়া যায়। পাশাপাশি সরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনও একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারী প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারিনা।

আমি জামিল ভাইয়ের নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না, কারণ তাতে আমাকে এমন কিছু রেফারেন্স টানতে হবে যেটা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হবে। আমি চাচ্ছিলাম না কারণ আমি তাঁকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফর রেকর্ডস আমাকে আসলে এগুলো বলতেই হবে। আজকে আমাদের অনেকগুলা কাজ আছে। এটা শেষ করে সময় পেলে লিখবো।

শুধু এইটুকু আপাতত বলে রাখি উনার বলা অনেকগুলা কথা পুরো সত্য নয়, অনেকগুলা কথা ডাহা মিথ্যা, এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারাজনিত হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মনে হচ্ছে। আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই।

পরিশেষে, আমি ওনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি। ওনার সৃজনশীল কাজে যে কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারলে মন্ত্রণালয় ধন্য হবে। আর আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার পরও তার কোনও সাহায্যে আসলে আনন্দিত হবো, যদিও আমাদের দুইজনের কাজের ক্ষেত্র আলাদা।

এভাবেই ট্রেলার শেষ করলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা। যেখানে এটুকু স্পষ্ট, সৈয়দ জামিল আহমেদ ফেরার জন্য যে চারটি শর্ত দিয়েছেন, সেটি আর বিবেচনা হচ্ছে না মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। ফারুকী স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, ‘আমি ওনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি। ওনার সৃজনশীল কাজে যে কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারলে মন্ত্রণালয় ধন্য হবে।’

বলা দরকার, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিল্পকলার মঞ্চে উঠে সিনেম্যাটিক ভঙ্গিতে পদত্যাগ করেন একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। এরপর তিনি, উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতি গুরুতর সব অভিযোগ তোলেন।