Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইরাকে মার্কিন হামলার রহস্য কি?

কথিত ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্যা লিভ্যান্ট বা আইএসআইএল’র বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করেছে আমেরিকা। তবে, শুরুতেই এর ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতা এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হাজার হাজার মানুষ ইহুদিবাদী ইসরাইলের গণহত্যার শিকার এবং কয়েক বছর ধরে সিরিয়ায় বিদেশি মদদপুষ্ট তাকফিরি সন্ত্রাসীরা ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে তখন সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ না করে শুধু ইরাকে মার্কিন বিমান হামলা শুরু হলো কেন?1ac668b65f57f3332ed61b1f6b69b3c4_XL

chardike-ad

এর বিপরীতে বাস্তবতা হচ্ছে, এই আইএসআইএল-কে সব ধরনের সমর্থন দিয়ে আসছে মার্কিন সরকার ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশ এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্র আরব রাষ্ট্রগুলো। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূরি আল-মালিকিও বহুবার এসব উগ্রবাদী সন্ত্রাসীকে সমর্থনের জন্য সৌদি আরব ও কাতারকে দায়ী করেছেন। কিন্তু দেশ দুটি আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিংবা তার প্রশাসন এ নিয়ে কখনো উচ্চাবাচ্য করে নি; বরং সিরিয়া ও ইরাকের উগ্রবাদীদেরকে সমর্থন দিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়- সিরিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা ও তার মিত্ররা যুদ্ধের জন্য সব ধরনের আয়োজনও করে ফেলেছিল। ইরান, চীন ও রাশিয়া বেঁকে বসার কারণে সে যুদ্ধযাত্রা সফল হয় নি।

ইরাকে মার্কিন বিমান হামলার কারণ হিসেবে অনেকে বলছেন, দিন দিন পরিষ্কার হতে শুরু করেছে যে, ইরাকের আইএসআইএল গোষ্ঠী খোদ আমেরিকারই মদদপুষ্ট। যে কারণে আমেরিকা নিজের সম্পৃক্ততা লুকাতে বিমান হামলা চালাচ্ছে যাতে বিশ্ববাসী আমেরিকাকে সন্দেহের তালিকায় না রাখে। এছাড়া, ইরাকের তেলসমৃদ্ধ কুর্দিস্তান নিয়ে পশ্চিমাদের নানা পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের ছক রয়েছে। আইএসআইএল’র হামলার পর ওই এলাকার অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও বিপদের মুখে পড়েছে। তাদের জন্য আমেরিকার বিশেষ দায়বোধ রয়েছে। এর পাশাপাশি গাজার দিক থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি সরিয়ে ইরাকের দিকে আনাও মার্কিন শাসক চক্রের অন্যতম লক্ষ্য। কারণ ইসরাইলকে তারাই লালন-পালন করে থাকে; গাজায় যে গণহত্যা চলছে তার বিরুদ্ধে দিন দিন জনমত ফুঁসে উঠছে। জনমতকে ভিন্ন খাতে নিতে ইরাকে মার্কিন বিমান হামলা চালানো অবান্তর কিছু নয়।

এছাড়া, ইরাকে হামলা দীর্ঘদিন চলবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যে ঘোষণা দিয়েছেন তার মধ্যদিয়ে এ আশংকাও জোরদার হচ্ছে যে, বিমান হামলার মাঝদিয়ে দেশটিতে নতুন উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছে ওয়াশিংটন।

গত ১০ জুন ইরাকের নেইনাভা প্রদেশের রাজধানী মুসল শহর দখলের মাধ্যমে ইরাকে আগ্রাসন শুরু করে আইএসআইএল। তাদের হাতে এ পর্যন্ত শত শত মানুষ অত্যন্ত নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। কিন্তু তখন আমেরিকা কিছুই বলে নি। যখন কুর্দিস্তান সংকটের মুখে পড়েছে তখন বিমান হামলা হচ্ছে; ফলে প্রশ্ন ওঠাও নিতান্তই স্বাভাবিক। অনেক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এও মনে করেন, আইএসআইএল’র মাধ্যমে আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো ইসলাম এবং মুসলমানদের বিকৃত রূপ তুলে ধরার যে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চাইছে তা সময়ের ব্যবধানে ব্যর্থ হবে। পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলাম গ্রহণের যে ঢেউ লেগেছে তাকে এসব ষড়যন্ত্রের কবলে বন্দি করা যাবে না।

রেডিও তেহরান