
গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন আর কোনো সম্ভাবনা নয়, বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধ ও টানা বোমাবর্ষণের কারণে জরুরি খাদ্য ও জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছানো ব্যাহত হচ্ছে। এতে শিশুরা ক্রমেই ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।
বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া কঠোর বক্তব্যে কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজায় যে দুর্ভিক্ষ চলছে, তা ‘পরিকল্পিত’ এবং সম্পূর্ণভাবে ‘মানুষ সৃষ্ট’ বিপর্যয়।
জাতিসংঘের উপ-মানবিক প্রধান জয়েস মুসুইয়া জানান, গাজার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে—যেখানে গাজা শহর অবস্থিত—দুর্ভিক্ষ নিশ্চিতভাবে শুরু হয়ে গেছে। তাঁর আশঙ্কা, আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি দক্ষিণে দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনুস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি পরিষদকে আরও বলেন, বর্তমানে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। আগামী মাসের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৪০ হাজার ছাড়াতে পারে। গাজার প্রায় প্রত্যেকটি মানুষই ক্ষুধার অভিঘাতে জর্জরিত।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুসুইয়া জানান, পাঁচ বছরের নিচে অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৩ হাজার শিশু আগামী মাসগুলোতে সরাসরি জীবন-সংকটে পড়তে পারে।
তিনি দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন, “এই দুর্ভিক্ষ কোনো খরা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে সৃষ্ট বিপর্যয়—একটি যুদ্ধের ফল, যা ব্যাপক বেসামরিক মৃত্যু, ধ্বংস, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও অমানবিক কষ্ট ডেকে এনেছে।”
অন্যদিকে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এ নিয়ে চলমান যুদ্ধে গাজায় ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৩ জনে, যার মধ্যে ১১৯ জনই শিশু।


































