
ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করতে গিয়ে জরুরি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে রায় দিয়েছে দেশটির ফেডারেল আপিল আদালত। শুক্রবার দেওয়া রায়ে আদালত জানায়, আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) প্রেসিডেন্টকে এত বিস্তৃতভাবে শুল্ক আরোপের অনুমতি দেয়নি।
আদালতের রায়: ৭-৪ ভোটে দেওয়া এই রায়ে বিচারকরা বলেন, শুল্ক, কর বা বাণিজ্য বিষয়ক এমন নীতি নির্ধারণ কংগ্রেসের এখতিয়ার। তাই ট্রাম্প যে যুক্তিতে আইইইপিএ ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, সেটি আইনের বাইরে। তবে আদালত আপাতত শুল্ক বাতিল করেনি; অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা বহাল থাকবে এবং এর মধ্যে সরকার আপিল করতে পারবে।
এর আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতও ট্রাম্পের শুল্ক নীতি প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া: রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লেখেন, এটি পক্ষপাতদুষ্ট রায় এবং মার্কিন অর্থনীতির জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন।
আইইইপিএ কী?: ১৯৭৭ সালের এই আইন একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জাতীয় নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি বা অর্থনীতির জন্য বিদেশি হুমকির জবাব দিতে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এই আইন ব্যবহার করেছিলেন। তবে আদালতের মতে, শুল্ক আরোপের মতো বিস্তৃত ক্ষমতা এই আইনের আওতায় পড়ে না।
সম্ভাব্য প্রভাব: অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এ রায় মার্কিন ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট যদি আপিল আদালতের রায় বহাল রাখে, তবে যুক্তরাষ্ট্র আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত বিলিয়ন ডলারের শুল্ক ফেরত দেবে কি না—সেই প্রশ্ন উঠবে। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
অন্যদিকে, যদি সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের পক্ষে রায় দেয়, তবে তার রাজনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে এবং ভবিষ্যতে আইইইপিএ আরও আগ্রাসীভাবে ব্যবহার করতে তিনি উৎসাহিত হবেন।
সূত্র: বিবিসি


































