Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আপনি ১০ কারণে আপডেট দেবেন উইন্ডোজ ১০

windows-10অনেক ফিচার নিয়ে হাজির হয়েছে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১০। এ নিয়ে গত ৩০ বছরে এলো ১৪ সংস্করণ। মাইক্রোসফটের ব্যবসার প্রাণ এ অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) এখন কালজয়ী এক নাম।

২০০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী বিশ্বজুড়ে এ সফটওয়ারের বর্তমানের জনপ্রিয় ভার্সন উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করেছে। পরের সংস্করণ উইন্ডোজ ৮ জনপ্রিয়তা না পেলেও তার ব্যবহারকারী কয়েক কোটি। এক্সপি কিংবা আরও পুরনো সংস্করণের ব্যবহারকারী এখনও কম নয়। এ হিসাব অফিশিয়াল। এর বাইরে কপি করে যে কত শত কোটি উইন্ডোজ ব্যবহার হয় তার হিসাব নেই।

chardike-ad

অনেক অপেক্ষার পর আলোচিত এ ওএস উইন্ডোজ ভক্তদের অনেকেই প্রিয় ডিভাইসে আপডেট করেছেন। তবে সাধারণদের বেশিরভাগই দ্বিধায় আছেন কি করবেন। সময় নিচ্ছেন নতুন উইন্ডোজ ১০-এ আপডেট করবেন কিনা তা নিয়ে। এমন ব্যবহারকারীদের জন্য এ প্রতিবেদন।

আপনি কেন উইন্ডোজ ১০ এখুনি প্রিয় ডিভাইসে আপডেট করবেন তা তুলে ধরা হলো এখানেঃ

নতুন এ ওএসে পরিচিত কিছু ফিচারকে উন্নত করার পাশাপাশি আনা হয়েছে দারুণ সব ফিচার। ছোট একটি ক্যানভাসে সব তুলে ধরা সহজ কথা নয়। এটির পরতে পরতে রয়েছে মনকাড়া সব ফিচার।

উইন্ডোজ ১০-এর মাধ্যমে স্মার্টফোনকে পুরোপুরি কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এমনকি স্মার্টফোনে মাউস ও কিবোর্ড যোগ করেও ব্যবহার করা যাবে। এর চেয়ে বড় সুখবর স্মার্টফোনপ্রেমীদের জন্য আর কি হতে পারে।

নতুন আরেকটি ফিচারের মধ্যে রয়েছে এই ওএস চালুর সময় তা চেহারা দেখে লগ ইন করা যাবে। ওয়েবক্যামে ব্যবহারকারী তার চেহারা দেখিয়ে ঢুকতে পারবেন কম্পিউটারে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘উইন্ডোজ হ্যালাে’। এমনকি মাস্ক পরেও কেউ উইন্ডোজকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

উইন্ডোজ অ্যাপ স্টোর থেকে ট্যাবের মতো ডেস্কটপ ব্যবহার করেও অ্যাপ নামাতে ও কেনার সুযোগ থাকছে এতে। ফলে একই ভিন্ন ডিভাইসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন অ্যাপের দিন ফুরালো বলে।

নতুন এক্স বক্স উইন্ডোজ অ্যাপের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও গেইম খেলা, গেইমের ক্লিপ দেখা এবং স্কোরের তুলনা করা যাবে কম্পিউটার থেকে। হোম নেটওয়ার্কে এক্স বক্স ওয়ান স্ট্রিমিং করে উইন্ডোজ ১০ চালিত ডেস্কটপে খেলা যাবে।

সংক্ষেপে আরও কয়েকটির কথা থাকছে এখানেঃ

এক বছর বিনা মূল্যে
উইন্ডোজ ১০ সংস্করণটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে অ্যাপ্লিকেশন নির্মাতারা স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, এক্সবক্স গেম কনসোল, স্মার্টওয়াচের জন্যও অ্যাপ তৈরি করতে পারবেন।

যারা উইন্ডোজের সাম্প্রতিক সংস্করণ ব্যবহার করছেন তারা বিনা পয়সায় উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেম আপগ্রেড করে নিতে পারবেন।

উইন্ডোজ ৭, উইন্ডোজ ৮.১ ও উইন্ডোজ ফোন ৮.১ ব্যবহারকারীরা এক বছর বিনা মূল্যেই আপগ্রেড করে নিতে পারবেন ওএসটি।

অল ইন ওয়ান
দিন দিন ডিভাইসের আকার বদল হচ্ছে। এক যুগে আগে কেউ ভাবেননি কম্পিউটার টেবিল থেকে হাতের মুঠোয় চলে আসবে। ট্যাব, ফ্যাবলেট ও স্মার্টফোনের কল্যাণে সেটিই সম্ভব হয়েছে।

ডেক্সটপ কম্পিউটারের পাশাপাশি এগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। প্রতিটি ডিভাইসের জন্য একই ওএস এখন আর কল্পনা নয়। সব ডিভাইস চলবে একই ওএস এবং একই অ্যাপ্লিকেশনে । নতুন উইন্ডোজ ১০-এর মাধ্যমে মাইক্রোসফট সে কাজটিই করেছে।

৪২ ইঞ্চি মনিটরে যেমন কাজ করবে উইন্ডোজ ১০, তেমনি ৫ ইঞ্চি স্মার্টফোনেও একইভাবে কাজ করবে। চলবে এক্স বক্স ওয়ানও।

তাই ব্যবহারকারীদের এখন প্রতিটি ডিভাইসের জন্য আলাদা ওএস নিয়ে দ্বিধা ও বিভ্রান্তিতে পরতে হবে না।

স্টার্ট মেন্যু
উইন্ডোজের নতুন সংস্করণ বাজারে আসার আগে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় ছিল স্টার্ট মেুন্য। প্রযুক্তি সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে ফাঁস হয়েছে নানা তথ্য ও ছবি। ফাঁস হওয়া তথ্যের সঙ্গে যথার্থভাবেই মিলে গেছে নতুন ওএসের স্টার্ট মেন্যু।

উইন্ডোজ ৮-এ স্টার্ট মেন্যু না থাকায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। তবে এবার একই ভুল আর করেনি বিল গেটসের প্রতিষ্ঠানটি।

নতুন র্স্টার্ট মেন্যুটি উইন্ডোজ ৭-এর মতো হলেও এটির ডান দিকে যুক্ত করা হয়েছে লাইভ টাইলস সুবিধা। এ ছাড়া রয়েছে উইন্ডোজ ৮-এর মতো মেট্রো সুবিধা।

একই সঙ্গে উইন্ডোজ ৭ এবং ৮ এর অভিজ্ঞতা
এখনও বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারী উইন্ডোজ ৭ ব্যবহার করছেন। তবে উইন্ডোজ ৮ ব্যবহারকারী সংখ্যাটা বেশ কম। একটি অপারেটিং সিস্টেমে অভ্যস্থ হওয়ার কারণে নতুন সংস্করণে যাওয়া অনেক ব্যবহারকারীদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য।

এমন ব্যবহারকারীদের কথা বিবেচনায় রেখে নতুন ওএসে উভয় সংস্করণের স্বাদ যাতে পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা রাখা হইছে।

ডিজিটাল সহকারী – কর্টানা
কর্টানা নামের একটি ‘সহকারী’ যুক্ত করা হয়েছে উইন্ডোজ ১০-এ। এটি অনেকটা অ্যাপলের ‘সিরি’র মতো। তবে মাইক্রোসফট কর্টানাকে ডাকছে ‘বিশ্বের প্রথম সত্যিকারের ডিজিটাল সহকারী’ হিসেবে।

কর্টানাকে ব্যবহারকারীরা লিখে বা ইংরেজিতে বলে নির্দেশ দিতে পারেন। এটি যুক্ত করা যাবে উইন্ডোজ স্মার্টফোনেও। এটি আপনাকে তার নিজের বিবেচনায় বিভিন্ন বিকল্প সুপারিশ করবে।

এছাড়া ওয়েবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তথ্যে আপনাকে সহজ প্রবেশাধিকারও দেবে এটি। মনে করিয়ে দেবে আপনার গুরুত্বপূর্ন কাজের কথা।

উন্নত টাচ ফিচার
উইন্ডোজ ৮ দিয়ে টার্চ নির্ভর উইন্ডোজচালিত ডিভাইসের যাত্রা শুরু । আগের টাচ ফিচারের বেশ কিছু বাগ বা ক্রুটি দূর করে একে সম্পূর্ণ গতিশীল এবং উন্নত মানের সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে নতুন ওএসে।

আঙ্গুলের স্পর্শের সাহায্যে জুম আউট, জুম করা, ক্রল ইত্যাদি করা যাবে খুব সহজে।

কি-বোর্ডের চমৎকার ফিচার
কি-বোর্ডের চমৎকার ফিচারটি সারফেস ট্যাবলেট ব্যবহারকারীদের বেশি কাজে লাগবে। এ ফিচারের ফলে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমচালিত ট্যাবে কি-বোর্ড যুক্ত করলে নোটিফিকেশনে দেখা যাবে ব্যবহারকারী কোন মোডে ডিভাইসটি ব্যবহার করতে চান। ট্যাব নাকি ডেক্সটপ মুডে। সে অনুযায়ী নির্দেশনা দেওয়া যাবে।

অসাধারণ এ ফিচার সারফেস ডিভাইসের ব্যবহারকারীদের জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। এখন ব্যবহারকারীরা সহজে মুড পরিবর্তন করে ডিভাইসটি ব্যবহার করতে পারবেন। আগে যে সুবিধা ছিল না।

ভার্চুয়াল ডেস্কটপ
অনেক সময় কাজের প্রয়োজনের একই সঙ্গে কয়েকটি উইন্ডো ওপেন করার প্রয়োজন হয়। লিনাক্স কিংবা ম্যাকে এ কাজের জন্য ভার্চুয়াল ডেক্সটপ ফিচার আছে । যার সাহায্যে একাধিক উইন্ডো খুলে রাখা যায় আলাদা করে।

কাজ করা সময় যেন মনে হয়ে আলাদা আলাদা মনিটরে কাজ করা হচ্ছে, সেই অনুভুতি হয়। এ রকম সুবিধা নিয়ে হাজির হলো উইন্ডেজ ১০।

ভার্চুয়াল ডেস্কটপ সুবিধারটির সাহায্যে একই সঙ্গে চারটি ডেস্কটপ ওপেন করা যাবে। নতুন অপারেটিং সিস্টেমতে রয়েছে ‘task view’ বাটন। এটির সাহায্যে ভার্চুয়ার ডেস্কটপে পরিনত করা যাবে যে কোনো উইন্ডোকে।

কমান্ড প্রম্পটে কাজ করবে কি-বোর্ড শর্টকাট
বর্তমানে কমান্ড প্রম্পটে কি-বোর্ড শর্টকাট করা করে না। ctrl+ v এবং ctrl+c এর মতো শর্টকাটগুলো কাজ করবে উইন্ডোজ ১০ এর কমান্ড প্রম্পটে। ফলে কমান্ড ব্যবহার করা আরও সহজ হবে যে কোন ব্যবহারকারীদের জন্য।

দ্রুত গতির মাইক্রোসফট এজ
উইন্ডোজ ১০-এ মাইক্রোসফট একটি নতুন ইন্টারনেট ব্রাউজারের সূচনা করেছে। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের সমাপ্তি ঘটাতেই আগমন ঘটেছে এটির।

দ্রুত গতির পাশাপাশি নতুন ফিচারে এ ব্র্যাউজারকেও নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্রাউজারের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বাজারে আবারও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় মাইক্রোসফট।

মাইক্রোসফট এজ-এ রয়েছে বিল্ট-ইন শেয়ারিং ও কমেন্টিং সিস্টেম। রয়েছে বিশেষ রিডার ইন্টারফেস। এর ফলে পড়ার ওয়েবসাইটগুলো পড়তে বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারীরা।

কর্টানার সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে এজ আপনার ব্যাক্তিগত রুচি অনুযায়ী সরবরাহ করবে বিভিন্ন ফলাফল ও পরামর্শ।

উইন্ডোজ ১০ এর ফিচার সম্পর্কে জানা যাবে মাইক্রোসফটের অফিসিয়াল এই ওয়েবসাইটে। (টেকশহর)