উত্তর কোরিয়ায় আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেসের সম্মেলন। এর আগে প্রথমবারের মতো অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির বিস্তারিত প্রকাশ্যে আনল দেশটি। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বড় পরিসরে পারমাণবিক মিসাইল উন্নয়নে কাজ করছে তারা। খবর রয়টার্স।
এর আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কে শোনা গিয়েছিল বিভিন্ন বিদেশী সরকার ও বিশেষজ্ঞদের মুখে। দেশটির রকেট উেক্ষপণ থেকে পাওয়া ধাতুর পারমাণবিক পরীক্ষার পর সে স্থান থেকে সংগৃহীত ছিন্ন পরমাণুর ওপর ভিত্তি করেই বিশ্লেষকরা দেশটির অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কে বলতেন। এছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবির ওপর নির্ভর করা হতো।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশের কারণ নিয়েও জল্পনা-কল্পনা চলছে বিশেষজ্ঞ মহলে। তারা বলছেন, রাজধানী পিয়ংইয়ং বিশ্বকে প্রত্যয়ী করতে বিশ্বাসী। দেশের নাগরিকদেরও পারমাণবিক দক্ষতার গুরুত্ব সম্পর্কে জানাতে চায়। তা না হলে উত্তর আমেরিকার প্রকৃত সক্ষমতা ও উদ্দেশ্য গোপনই রাখতে চায়। মাঠে পরীক্ষা কার্যক্রমের ছবিটির সঙ্গে ডিপিআরকের কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছেন না বৈমানিক প্রকৌশলী জন শিলিং। তিনি স্যাটেলাইট বিশেষজ্ঞ। ডিপিআরকে হচ্ছে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া। বলা হয়, দেশটি গত ১০ বছরে চারটি পারমাণবিক পরীক্ষা পরিচালনা করেছে। শেষটি সম্পাদন করেছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি প্রকাশ্যে আনার বিষয়টি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন শিলিং। তার ভাষ্যে, এটি একটি কূটনৈতিক কৌশল। দেশটির প্রকাশিত সক্ষমতার তুলনায় আরো বেশি শক্তিশালী। গত শনিবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশটির নতুন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) পরীক্ষা সফল হয়েছে।
গত মাসে জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওয়াশিংটনসহ অন্য দেশ থেকেও সতর্কতা বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ে থামার কোনো লক্ষ্যই নেই। তারা তাদের কার্যক্রম জারি রাখছে। এ থেকেই বোঝা যায়, তারা বিষয়টি থেকে পিছু হটবে না— বলেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রকেট বিশেষজ্ঞ মাইকেল ইলহাম। তিনি কাজ করছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে।
ইলহামের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি-বিষয়ক প্রকাশিত তথ্য সক্ষমতা উন্নয়নের একটি অংশ। এসব তথ্য কতটা বাস্তব— প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এ নিয়ে জার্মান বৈমানিক প্রকৌশলী মারকাস শিলারও সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি এখনো উত্তর কোরিয়ার প্রকাশিত অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। বণিকবার্তা।