Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আবারো চালু হচ্ছে দুই কোরিয়ার হটলাইন

north-korea-hotlineশীতকালীন অলিম্পিকে সম্ভাব্য অংশগ্রহণের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা সহজ করার জন্য আবারো টেলিফোন হটলাইন চালু করবে বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ এক খবরে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় আন্তঃকোরীয় যোগাযোগ চ্যানেল আবারো কার্যকর হবে।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ ও অলিম্পিক গেমসে তাদের খেলোয়াড়দের পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করার পর হটলাইন চালু করার ঘোষণা দিল পিয়ংইয়ং। তবে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এখনো পর্যন্ত উচ্চপর্যায়ে সংলাপে বসেনি দুই কোরিয়া।

chardike-ad

উত্তর কোরিয়ার এক কর্মকর্তা বুধবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে টেলিফোন হটলাইন আবারো চালু করার বিষয়ে টেলিভিশনে ঘোষণা দেন। ঘোষণা দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচাংয়ে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক গেমসে খেলোয়াড়দের পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে হটলাইনে যোগাযোগ করা হবে।

দক্ষিণ কোরিয়া আভাস দিয়েছে, অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হবে। এর আগে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার সময় উত্তেজনা প্রশমনের সুরে কথা বলেন এবং দুই কোরিয়ার স্থবির সম্পর্ক গতিশীল করার ইঙ্গিত দেন। উন বলেন, খেলায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে ‘ঐক্য প্রদর্শনের ভালো সুযোগ পাবে উত্তর কোরিয়ার জনগণ।’

কিম জং-উনের মন্তব্যের পর দক্ষিণ কোরিয়া উচ্চপর্যায়ে সংলাপের প্রস্তাব দেয় এবং প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলেন, সম্পর্কোন্নয়নের জন্য এটি ‘বিশাল সুযোগ’। তবে উচ্চপর্যায়ে সংলাপে বসার বিষয়ে উত্তর কোরিয়া এখনো পরিষ্কার মতামত দেয়নি। কিন্তু হটলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে তারা।

দুই কোরিয়ার যৌথ শিল্পাঞ্চল কায়েসং নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৬ সালে হটলাইন বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। তবে দক্ষিণ কোরিয়া দাবি করে, ওই সময় থেকে হটলাইনে কল করা হলে কোনো উত্তর দেওয়া হয় না।

মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার এক কর্মকর্তা বলেন, কিম জং-উনের মন্তব্যের পর তাদের সঙ্গে হটলাইনে যোগাযোগা করার চেষ্টা করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এরপর বুধবার উত্তর কোরিয়া হটলাইন চালু করার ঘোষণা দিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন, ‘হটলাইনে আবারো যোগাযোগ চালু হওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।’ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, যেখানে সব সময় যোগাযোগ করা সম্ভাব হবে।’

পরমাণু কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অব্যাহত রাখায় উত্তর কোরিয়া বর্তমানে কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। সবশেষ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যাতে উত্তর কোরিয়ায় ৯০ শতাংশ পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্য রপ্তানি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে এবং আগামী ২৪ মাসের মধ্যে বিদেশে কাজ করা সব উত্তর কোরীয়কে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উত্তরে নববর্ষের ভাষণে কিম জং-উন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলেন, পরমাণু বোমার বোতাম সব সময় তার টেবিলেই আছে। প্রয়োজনে যেকোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রে হামলা করার ইঙ্গিত দেন তিনি। এর জবাবে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, উনের চেয়ে পরমাণু হামলার বড় বোতাম তার কাছে আছে।

অপরদিকে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপে বসার যে প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তার বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, এভাবে কোনো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলতে পারে না এবং ‍উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রধারী রাষ্ট্র হিসেবে কখনোই স্বীকার করবে না যুক্তরাষ্ট্র।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন