Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যে দশটি কারণে সিউল সাবওয়ে বিশ্বসেরা

দৈর্ঘ্য আর ব্যাপ্তি বিবেচনায় সিউল মেট্রোপলিটন সাবওয়ে বিশ্বে সর্ববৃহৎ। ১৯ টি লাইন সম্বলিত এই পাতাল রেল সেবা সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃতও বটে। স্টেশন সংখ্যা বিচারে নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ের পরপরই এর অবস্থান। চলুন একনজরে দেখে নেয়া যাক সিউল সাবওয়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহ।

উষ্ণ আসন

chardike-ad

434842(0)-550412_84604কোরিয়ায় শীতকাল মানেই কনকনে ঠাণ্ডা। শূন্যের নীচে তাপমাত্রায় জমে যাওয়া থেকে বাঁচতে প্রস্তুতিটাও তাই এখানে খুব যুতসই হওয়া জরুরী। তবে সিউল মেট্রোতে চড়ে বসলে শীত তাড়ানোর চিন্তাটা সাময়িকভাবে আপনার না করলেও চলবে। যাত্রাপথে আরামদায়ক উষ্ণতা নিশ্চিত করতে প্রতিটা আসনেই পৃথক তাপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা রয়েছে।

নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক

seoul-subway-wifi-223x300সিউল মেট্রোর স্টেশন ও যাত্রাপথে মোবাইল নেটওয়ার্ক যুক্ত হওয়ার খবর এক দশকের পুরনো। এখন সিউলের পাতাল সড়কে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পেইড ও নন-পেইড ওয়াইফাই সংযোগও। এছাড়া সেলুলার, থ্রিজি, ফোরজি এলটিই ও মোবাইলে টিভি দেখার জন্য ডিএমবি নেটওয়ার্ক সুবিধা পাবেন বিনামূল্যেই।

ডিজিটাল স্ক্রিন

hpim0948_jukiseen-300x225সিউল সাবওয়েতে নতুন চালু হওয়া প্রায় সব ট্রেনেই রয়েছে ডিজিটাল স্ক্রিন। এসব পর্দায় যাত্রাসংক্রান্ত বিভিন্ন ঘোষণা, আসন্ন স্টেশনসমূহের নাম ছাড়াও দেখানো হয় আন্তর্জাতিক খবরাখবর, শেয়ার বাজারের সর্বশেষ দর এমনকি ফুটবল হাইলাইটসও। সুতরাং, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হ্যাট্রিক গোলের দৃশ্যে বিভোর থেকে নির্দিষ্ট স্টপেজে নামতে ভুলে যাবেন এমনটা হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

চোখ জুড়ানো, মন ভরানো কামরা

legroom-300x225বিশ্বজুড়ে বেশীরভাগ পুরনো পাতাল রেলের কামরাগুলো বেশ ছোট ও সাদামাটা গঠনের। তবে সিউলের সাবওয়ে ট্রেনের কামরা কেবল বড় আর প্রশস্তই নয়, গড়ন আর সাজসজ্জায়ও যথেষ্ট আধুনিক। এমনিতে সাধারণ কর্মদিবসে এসব ট্রেনে ভিড়বাট্টা থাকেনা বললেই চলে। কিন্তু রোববারের ছুটির সন্ধ্যায় দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন, দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়াও দায় হয়ে পড়ে অনেকসময়।

একাধিক ভাষায় ঘোষণা

talk-about-feelings-comp-300x182পর্যটকদের জন্য সিউল সাবওয়ের সবচেয়ে উপকারী দিকটি হচ্ছে প্রয়োজনীয় ঘোষণাগুলো একাধিক ভাষায় প্রদান। সব স্টেশনে না হলেও পর্যটকরা ভিড় জমান এমন প্রায় প্রতিটা সাবওয়ে স্টেশনেই কোরিয়ানের পাশাপাশি ইংরেজী, জাপানী ও চীনা ভাষায় বিভিন্ন ঘোষণা ও দিকনির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর কারও কারও কিছুটা বিরক্তির উদ্রেকও করতে পারে। তবে মনুষ্য কণ্ঠের মধুর বর্ণনার একটা বর্ণও না বোঝার চেয়ে সেটা বরং ঢের ভালো।

ঝকঝকে নতুন স্টেশন

apgujeong-rodeo-station-300x225নতুন লাইন স্থাপন ও পুরনো লাইন প্রবর্ধনের মাধ্যমে সিউল সাবওয়ে সিস্টেম সম্প্রসারিত হচ্ছে খুব দ্রুতগতিতে। নতুন নতুন সাজ আর স্থাপত্যশৈলীর সাবওয়ে স্টেশন সিউলের নান্দনিক সৌন্দর্যে যোগ করছে ভিন্ন মাত্রা।

নিরাপত্তা

subway-screen-doors-300x224ষ্টেশনে যতক্ষণ ট্রেন থাকে প্ল্যাটফর্মের দরজা কেবল ততক্ষণই খোলা থাকে। ফলে রেললাইনে পিছলে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই। আর সিউলে বড় ধরনের কোন অপরাধ হয় না বললেই চলে। গভীর রাতেও তাই পাতাল রেলে চড়তে পারেন নিশ্চিন্তে।

কেনাকাটার সুবিধা

gangnam-station-shopping-300x200সিউল সাবওয়ের প্রতিটা স্টেশনেই ভেতরে কিংবা সংলগ্ন পাতাল মার্কেট রয়েছে। এসব দোকানে ইচ্ছেমতো দামদর যেমন করতে পারবেন তেমনি দেখেশুনে বেছে নেয়ার জন্য পাবেন বিশাল সংগ্রহ। তবে নামীদামী বিদেশী ব্র্যান্ডের খোঁজ এখানে করে লাভ নেই, সিউলের পাতাল মার্কেট মানেই সস্তা কোরিয়ান ফ্যাশনের প্রদর্শনী। এক্সপ্রেস বাস টার্মিনাল স্টেশন কিংবা খাংনাম স্টেশনের পাতাল মার্কেটে একদিন ঘুরেই দেখুন, কোরিয়ান ফ্যাশনের সমাহার আপনাকে হতাশ করবে না।

সিউল সাবওয়ে লাইন ২

png-300x112স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও সিউল সাবওয়ে লাইন ২ একপ্রকার স্বর্গই বলা চলে। স্নিগ্ধ সবুজ পাতাল সড়কটি ছুয়ে গেছে সিউলের সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলোঃ খাংনাম, মিয়ংদোং, দোংদেমুন, হোংদেসহ আরও অনেক এলাকা। এর সংযোগ রয়েছে অন্যান্য লাইনের সাথেও। সিউল ভ্রমণে বের হলে সাবওয়ে লাইন ২-এর কথা একেবারেই ভোলা যাবে না!

ভাড়া

jpeg-5-300x241এতো এতো সুযোগসুবিধার সিউল পাতাল রেলে ন্যূনতম ভাড়া ১ হাজার ৫০ উওন (প্রায় ১ ইউএস ডলার)।

না এটা গোটা দুনিয়ায় সবচেয়ে কম ভাড়া এমনটা ভাবার কোন কারন নেই। তবে প্রযুক্তিগত সুবিধাদি, মালামাল বিনামূল্যে কামড়া পর্যন্ত পৌঁছে দেয়াসহ সব কিছু বিবেচনায় আনলে ভাড়াটা আপনার কাছে মোটেও খুব বেশী মনে হবে না।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া, পরিচ্ছন্নতা আর সহজ ব্যবহারে গোটা দুনিয়ার জন্য রীতিমতো আদর্শ হয়ে ওঠা সিউল সাবওয়ে পরিবহণ সেবা সংক্রান্ত বিখ্যাত ব্লগ জালোপনিকের এক সমীক্ষায় ‘সুপার হাইওয়ে’ নাম নিয়ে বিশ্বসেরার খেতাবটিও ইতোমধ্যে দখল করে নিয়েছে। প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোগত সংযোজন, সম্প্রসারণে এর উত্তরোত্তর উৎকর্ষ সাধনও অব্যাহত আছে। সন্দেহাতীতভাবেই এ পাতাল সড়ক সিউলের যাতায়াত ব্যবস্থাকে করে তুলছে অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ্যময় ও আরামদায়ক। সিউলাস্টিক অবলম্বনে।