Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

এমদাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে দিল ছাত্রলীগ!

imdadচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো: এমদাদুল হকের স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার। গত ২৭ তারিখে নিজ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। এসময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে এলে শিবির কর্মী সন্দেহে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গেছে তাই এ বিষয়ে আর কোন সুযোগ নেই। এর ফলে শিক্ষক হওয়া স্বপ্ন ভেঙ্গে গিয়েছে এমদাদের। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক সংগঠন সিএফসি এবং শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুলহাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমদাদুল হক ২০০৮-০৯ শিক্ষা বর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। সে বিভাগের সর্বোচ্চ ৩.৮৮ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন এবং স্নাতকোত্তরে ৩.৯৬ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক র্জানালে তার তিনটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। শিক্ষা জীবনের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক ২০১৫ এবং বাংলাদেশ জুলজিক্যাল সোসাইটি পদক ২০১৫ লাভ করেন।

chardike-ad

এমদাদুল হক বলেন, ২৭ তারিখ সাড়ে নয়টার দিকে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আর মল্লিক প্রশাসনিক ভবনে আসার পরে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র আনোয়ার হোসেন ও মোকসেদ আলি আমার দিকে এগিয়ে আসে এবং কুশলাদি জিজ্ঞেস করে। তাদের সাথে ছিলেন, আনোয়ার হোসেন, আসিফ মাহমুদ শুভ, মোকসেদ আলি ওরফে মীলু প্রামানিক, জাহিদুল হাসান, রফিকুল ইসলাম, আসির উদ্দিন, শরীফ উদ্দিন।

পরে তারা আমাকে বলে আপনি আমাদের সাথে কথা বলে আসেননি তাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ছোট ভাইদের কিছু দাবিদাওয়া আছে সেটা মিটাতে হবে পরীক্ষা দিতে হলে। আমি দিতে অনিহা প্রকাশ করলে তারা আমাকে মারধর করতে থাকে এবং কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্যাগোডায় নিয়ে গিয়ে মারধর করে। এসময় মাথায় পিস্তল ধরে বলে এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলবে। পরে বেলা ১২ টার দিকে পুলিশে দেয় আমাকে।

প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো: ইসমাইল মিয়া বলেন, সে কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল এটা আমার জানা নেই। তবে আমার মনে হয়েছে সে যাতে শিক্ষক না হতে পারে এই জন্য কেউ দুর্ভিসন্ধিমূলক ভাবে এটা ঘটিয়েছে।

এমদাদের সাথে শিবিরের কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহংগীর বলে, ওগুলা বলতে পারব না। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিবাবকের হাতে তুলে দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার কে এম নুর আহমদ বলেন, ভাইবা বোর্ড গঠিত হয় একবারের জন্য। তাই একবার ভাইবা হওয়ার পরে আর কারো ভাইবা নেওয়া সম্ভব নয়।

মীর রাসেল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়