Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

গাছ বিক্রি করে হজের স্বপ্ন পূরণ করলেন গাইবান্ধার এক কৃষক

hajiমুমিন হৃদয়ে সর্বোচ্চ আকাঙ্ক্ষার ইবাদত হলো হজ। যদিও হজের জন্য রয়েছে আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা। তথাপিও এমন অনেক অসহায় ও শারীরিক প্রতিবন্ধী রয়েছেন যারা হজের জন্য থাকেন আত্মহারা। আল্লাহ তাআলা সেসব বান্দাদের জন্য হজের ব্যবস্থাও করে দেন।

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হজের স্বপ্ন পূরণে গাছের পরিচর্যা করেন। গাছ বিক্রির টাকায় সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন এক কৃষক। তিনি ১৮ বছর আগে জমির আইলে লাগিয়েছেন গাছ। অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষে হজে গেলেন গাইবান্ধার মধ্যবয়স অতিক্রম করা এ কৃষক।

chardike-ad

বাংলাদেশের গাইবান্ধার জেলার শাদুল্লাপুরের এক কৃষক গাছ বিক্রির টাকায় হজ পালনের উদ্দেশে গিয়েছেন সৌদি আরবে। ফেসবুকে বৃদ্ধ সম্বোধন করা হলেও, ছবি বলে দেয় যে, তিনি মধ্য বয়স অতিক্রম করছেন।

ছবিসহ সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ‘গাছ বিক্রির টাকায় হজ’-এর এ খবর ভাইরাল হয়ে যায়। আর তা হলো-

একজন হাজি সাহেব। বয়সে বৃদ্ধ। এসেছেন হজে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থেকে। হোটেল লবিতে (বারান্দায়) বসে (বৃদ্ধ হাজির সঙ্গে) কথাবার্তা বলছি। (তাকে) খুব আবেগী মনে হলো।,

জানতে চাইলাম, কি কাজ করেন বাড়িতে?

-ক্ষেত-খামার (কৃষি কাজ) করি।

-আচ্ছা! তাহলে হজে আসলেন (খরচ মেটালেন) কীভাবে?

উত্তর দিলেন, বাবা! ১৮ বছর আগে হজের ইচ্ছা করি। কাবা ঘরটা দেখার শখ ছিল অনেক। হজের উদ্দেশে ১৮ বছর আগে জমি ও ক্ষেতের আইলে ইউক্যালিপটাসসহ কিছু গাছ রোপণ করি।

হজ করার আশা নিয়ে গাছের পরিচর্যা করতে থাকি। গাছগুলো বড় হয়। এবার সে গাছগুলোর বেচা টাকা দিয়েই হজে আসলাম।

আমি বললাম, ‘মাশাআল্লাহ’। আপনার হজের টাকাটা কত পিওর! কোন হারামের মিশ্রণ নেই। সম্পূর্ণই পরিশ্রমের টাকা।

হাজি সাহেব বলেন, আরেকটু শুনুন!
– গাছগুলো বড় হওয়ার পর, প্রায়ই যখন রাত হতো, মানুষ ঘুমিয়ে পড়তো, আমি গাছগুলোর কাছে যেতাম। গাছ ধরে ধরে কাঁদতাম, দোয়া করতাম। আল্লাহ যেন আমাকে হজে নিয়ে যান।
– একটা গাছের বয়স আঠারো। সেটি বেচে ৩০ হাজার টাকা জোগাড় হলো। দেরি না করে সেই টাকা দিয়েই হজের রেজিস্ট্রেশন করে ফেলি।
– এরপর প্রথমে ২২টা। তারপর ২০ টা গাছ বিক্রি করে হজের টাকা সংগ্রহ করি। কাঁদোকাঁদো হয়ে গেলেন। বললেন, আল্লাহই আমারে নিয়ে এসেছেন।

এরপরে আরও অনেক কথা হলো। আমি কাছ থেকে নিখাদ হৃদয়ের মানুষটাকে দেখতে থাকলাম। ভাবলাম, এসব হাজিদের হজ কবুল হতে আর কত দেরি!’

ফেসবুকের এ পোস্ট ও ব্যক্তির ঘটনাই প্রমাণ করে যে, একনিষ্ঠ ইচ্ছা থাকলে যে কোনো কঠিন কাজই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সফলতায় প্রয়োজন আন্তরিক সদ্বিচ্ছা। আর স্বদিচ্ছা থাকলেই যে কোনো ব্যক্তিই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম।

আল্লাহ তাআলা উল্লেখিত ব্যক্তির হজকে সহজ করে দিন এবং কবুল করুন। মুসলিম উম্মাহকে হজ ও ওমরার তাওফিক দান করুন। আমিন।