সমকামিতার কারণে ইংলিশ মিডিয়াম ও-লেভেলের ছাত্র জুবায়ের আহমেদকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে । উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ফুটবল খেলার মাঠের পাশের পুকুরে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম।
শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ নাজমুল আলম বলেন, গত ৪ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের মাঠে ফুটবল খেলতে যায় জুবায়ের। ওই দিন রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত সে বাসায় না ফেরায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। বাসায় রেখে যাওয়া জুবায়েরের পরিচিত ব্যক্তিদের মোবাইলে ফোন করতে থাকে। তখন নিহত জুবায়েরের বন্ধু ইসমাঈলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায় ও আলজেরিয় নাগরিক আবু ওবায়েদ কাদের তার ফোন রিসিভ করেননি। পরের দিন ভোর ৬ টার দিকে পুনরায় কাদেরের মোবাইলে ফোন করলে সে জুবায়েরের অবস্থান সম্পর্কে জানে বলে তার পরিবারের সদস্যদেরকে জানায়। কাদেরের অসংলগ্ন কথাবার্তায় তাদের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পরে উত্তরা থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের কাদের জুবায়েরের লাশ মাঠের পুকুরে রয়েছে বলে স্বীকার করেন।
উপ-কমিশনার বলেন, এ ঘটনায় আবু ওবায়েদ কাদেরের স্বীকারোক্তিতে ইসমাঈলকে আসামি করে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ গত ১০ অক্টোবর বিকাল ৪ টার দিকে ইসমাঈলকে গ্রেপ্তার করে। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইসমাঈল জানায়, গত ৪ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে সে কাদের ও নিহত জুবায়েরসহ আরো কয়েকজন মিলে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের মাঠে ফুটবল খেলে। খেলা শেষে সে জুবায়ের ও কাদের ব্যতিত অন্য খেলোয়াররা মাঠ ত্যাগ করে। তারা তিনজন মাঠের পাশের পুকুরের পাশে গিয়ে বসে। জুবায়ের তার গায়ের জার্সি খুলে পুকুরের পানিতে নামে। সাথে সাথে কাদেরও পানিতে নেমে জুবায়েরকে ধরে বলাৎকার করার চেষ্টা করে। ওই সময় জুবায়ের ও কাদেরর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে জুবায়েরের মৃত্যু হয়। জুবায়েরর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরে তার লাশ পুকুরের পানিতে রেখে তারা চলে যায়।
তিনি আরো বলেন, ইসমাঈল এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে কাউকে কিছু যেন না বলে এজন্য তাকে টাকা পয়সা ও বিদেশে নেওয়া প্রলোভন দেখানো হয়। ইসমাঈল জুবায়েরের হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনাটি পুকুর পাড়ে বসে দেখেছে বলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ওবায়েদ কাদের একজন আলজেরিয় নাগরিক এবং একজন সমকামী। সে প্রায় ১০ বছর ধরে পাসপোর্ট ছাড়াই বাংলাদেশে বসবাস করছে। কে কিশোরদের ফুটবল প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। সখ্যতার এক পর্যায়ে সে তাদের সাথে বিভিন্ন সময়ে সমকামিতায় লিপ্ত হয়। কাদের একজন অবিবাহিত পুরুষ। তার ফেসবুক আইডি, মোবাইল ও ইমেল আইডি চেক করে সমকামিতার ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাদেরের ব্যবহৃত মোবাইলের সিমকার্ড রেজিস্টেশনের ক্ষেত্রে সে নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক পরিচয় দিয়েছে। সমকামিতার প্রচেষ্টা জুবায়েরের ওপর সফল করতে না পেরে সে জুবায়েরকে হত্যা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ফুটবল খেলার মাঠের পাশের পুকুর থেকে নিহত জুবায়ের আহমেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জুবায়েরের মা দিলারা বেগম বাদি হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঢাকা টাইমস।