
ফাইল ছবি
জলবায়ু পরিবর্তন, অতিরিক্ত যানবাহন, নির্মাণকাজ এবং শিল্পকারখানার নির্গমন—সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে আসছে ঢাকা। আজ সকালেও রাজধানীর বায়ুমান আবারও বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ যেনো বায়ুদূষণে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার আরেকটি দিন।
সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর দাঁড়িয়েছে ২৭১। এই মান নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পড়ে। শিশুসহ প্রবীণ ও অসুস্থ মানুষদের জন্য এটি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।
ঢাকার পর বিশ্বদূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে মিশরের কায়রো (২৬০ স্কোর) এবং ভারতের রাজধানী দিল্লি (২৫১ স্কোর)। দুটি শহরের বায়ুমানও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে অবস্থান করছে।
একিউআই মূলত বায়ুদূষণের মাত্রা নির্দেশ করে এবং স্কোর যত বাড়ে, ঝুঁকিও তত বাড়ে। শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত স্কোরকে নিরাপদ ধরা হলেও শতকের ঘরে পা দিলেই ঝুঁকির মাত্রা বাড়তে থাকে। মাঝারি জায়গা পেরিয়ে ১০০–১৫০ এর মধ্যে বায়ু সংবেদনশীলদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। ১৫০ পেরুলেই বায়ুমান স্পষ্টভাবে অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছায়। আর ২০০ ছুঁলেই বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করে। ৩০০-এর কাছাকাছি পৌঁছালে পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠে—যেখানে অল্প সময়ের জন্যও বাইরে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ।
বায়ুমান নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হয় পাঁচ ধরনের প্রধান দূষণকারী উপাদান—পিএম২.৫, পিএম১০, কার্বন মনোক্সাইড (সিও), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) এবং ওজোন। এসব উপাদান সহজেই ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসযন্ত্র, হৃদ্যন্ত্র এবং রক্ত সঞ্চালনব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ অকালমৃত্যুর শিকার হন। শ্বাসকষ্ট, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুসের ক্যানসারের মতো মারাত্মক অসুখের হার দূষিত শহরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
দীর্ঘদিনের মতো আজও বায়ুদূষণের শীর্ষে অবস্থান করে রাজধানী ঢাকা আবারও প্রমাণ করল—বায়ুদূষণে সে যেন এক অনিচ্ছাকৃত ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’।




































