শনিবার । ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক রাজধানী ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ন
শেয়ার

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা, পুলিশকে যা জানাল গৃহকর্মী আয়েশা


mother-daughter-kill

লায়লা আফরোজ ও মেয়ে নাফিসা আজিজ এবং অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা (ডানে)

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্মী আয়েশাকে অবশেষে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।

মোহাম্মদপুর থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সহিদুল ওসমান মাসুম জানান, আয়েশাকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপির মিডিয়া শাখা জানায়, তেজগাঁও বিভাগের ডিসির সরাসরি তত্ত্বাবধানে থানার একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আয়েশা পলাতক ছিলেন, কিন্তু ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তার অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশ।

এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) মোহাম্মদপুরে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আয়েশা জানায়, ঘটনার দিন তিনি বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজ তাকে চুরির সন্দেহে আটকে তল্লাশি করতে চান। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনি লায়লা আফরোজকে আঘাত করেন। লায়লার চিৎকার শুনে মেয়ে নাফিসা দৌড়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করেন। এ সময়ে তার নিজের হাতেও কোপ লাগে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে পুলিশের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, আয়েশার বক্তব্য পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য নয়। তার দেওয়া কিছু তথ্য অসংগতিপূর্ণ এবং ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কি না— তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডটি সম্পূর্ণ হঠাৎ নাকি পরিকল্পিত—সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, আয়েশার স্বামী রাব্বীকে ধরার পর তার দেওয়া তথ্যেই পরে নলছিটি থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। তদন্তে জানা গেছে, আয়েশা ছয় মাস আগে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার একটি বাসায় চুরির ঘটনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

মা-মেয়ে হত্যার এই হৃদয়বিদারক ঘটনার তদন্তে পুলিশ ইতোমধ্যে জোর তৎপরতা শুরু করেছে। আটক আয়েশার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে পুরো ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।