Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সৌদি আরবে বাসাবাড়ির আট লাখ ড্রাইভারের কী হবে?

saudi-womenনারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা ওঠানোর ব্যাপারে বাদশাহ সালমানের ঘোষণার পর সৌদি আরবে উল্লাস শুরু হয়েছে। সৌদি মহিলা এমপি লাতিফা আলশালান বলেছেন, “সৌদি নারী সমাজের জন্য এটা বিশাল এক বিজয়। তারা দশকের পর দশক ধরে এই অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছে।”

মানাল আল শরিফ নামে যে সৌদি নারী আইন ভেঙ্গে গাড়ি চালানোর জন্য কারাগারে গিয়েছিলেন, তিনি টুইট করেছেন, “সৌদি আরব চিরদিনের জন্য বদলে গেছে।”
বাদশাহ সালমানকে অভিনন্দন জানিয়েছে এমনকী যুক্তরাষ্ট্র।

chardike-ad

কিন্তু সাথে সাথেই প্রশ্ন উঠেছে, মহিলাদের যাতায়াতের জন্য যে লাখ লাখ অভিবাসী ড্রাইভারের সৌদি আরবে চাকরি হয়েছে এবং হচ্ছে, তাদের কী হবে? এক হিসাবে, শুধু সৌদি নারীদের যাতায়াতের প্রয়োজনে সেদেশে ৮০০,০০০ ড্রাইভার কাজ করে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাংলাদেশী।

সঠিক হিসাবে পাওয়া না গেলেও, ঢাকায় শীর্ষস্থানীয় জনসম্পদ রফতানিকারক আলী হায়দার চৌধুরী বিবিসিকে বলছেন, গৃহকর্মে কাজের জন্য নতুন করে লোক নিয়োগের ভিসা দেয়া শুরুর পর গত দেড় বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ৫০,০০০ লোক ড্রাইভারের চাকরি নিয়ে সৌদি আরব গেছেন।

জেদ্দায় রেন্ট- এ-কার ব্যবসার সাথে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন বাহার বকুল। তিনি বিবিসিকে বলেন, প্রচুর বাংলাদেশীকে তিনি চেনেন যারা বিভিন্ন সৌদি পরিবারে গাড়িচালকের কাজ করেন। “অনেক বাড়িই কয়েকজন ড্রাইভার কাজ করে। মনে করেন, তিনটি বাচ্চা তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্কুলে যায়, তাদের তিনজনের জন্যই হয়তো তিনজন ড্রাইভার। অধিকাংশই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার।”

নারীরা গাড়ি চালানো শুরু করলে তাদের চাকরি কি হুমকিতে পড়তে পারে? বাহার বকুল বললেন, এখনই চট করে বলা মুশকিল। “একজন ড্রাইভারের বেতন কম করে ১৫০০ রিয়াল। মহিলারা গাড়ি চালাতে পারলে হয়তো অনেক পরিবার পয়সা বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারে।”

মি বকুল বলেন, সৌদি আরবে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন কাজে মহিলাদের দেখা যাচ্ছে যেটা আগে দেখাই যেতনা। “সুপার মার্কেটগুলোতেও এখন মেয়েরা কাজ করছে। গাড়ি চালাতেও দেখবো হয়তো কিছু দিন পর।”

জনসম্পদ রফতানিকারক আলী হায়দার চৌধুরী, যিনি ২২ বছর সৌদি আরবে ছিলেন, তিনি মনে করছেন গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও অদূর ভবিষ্যতে খুব কম সৌদি মহিলাই হয়তো গাড়ি চালাবেন।

“আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি সৌদি সমাজ এতটাই রক্ষণশীল যে তাদের কতজন গাড়ি চালাবেন, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। পশ্চিমা দেশে গিয়ে পড়াশোনা করে আসা কিছু হয়তো গাড়ি চালাবেন, কিন্তু সেই সংখ্যা খুব বেশি নয়।” উদাহরণ হিসাবে মি চৌধুরী কাতার এবং কুয়েতের কথা উল্লেখ করেন।

“কুয়েত, কাতারেও মেয়েরা গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু তারপরও ঐ দুই দেশে অনেকেই বাসাবাড়িতে ড্রাইভারের কাজ নিয়ে যাচ্ছে।” চৌধুরীর মতে, কত সৌদি নারী ড্রাইভারের পয়সা বাঁচাতে গাড়ি চালাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে সৌদি অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির ওপর।