Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দক্ষিণ কোরিয়ায় ঈদ শপিং এবং প্রবাসীদের ঈদ

korea-eidদেশ থেকে একজন জিজ্ঞেস করছে ঈদের শপিং করছি কিনা বা কখন করবো? উত্তর দিলাম ঈদের শপিং বলতে পৃথিবীতে কিছু আছে নাকি? যদি থেকে থাকে তাহলে সেটা বাংলাদেশে আছে, বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য না!

গত কিছুদিন যাবত ছোট ভাই জিজ্ঞেস করতেছিলো ঈদের জন্য কি কিনে পাঠাবে? কয়দিন আগে পরপর দুইদিনে দুইটা চশমা ভেঙে গেছে, তাই ৩টা চশমা কিনে পাঠানোর জন্য আগেই বলছিলাম এবং সে কিনেও রাখছে, তাই বললাম তাহলে ঐ ৩টা চশমাই আমার ঈদ শপিং।

chardike-ad

প্রবাসে রোজা রেখে ক্লাস করা, ল্যাব করা বা জব করা খুবই কষ্টকর। কারো ইফতার করার সৌভাগ্য হয় আবার কারো হয় না। ঈদের শপিং’ত অনেক দুরের কথা। প্রবাসে যারা পড়াশোনা করে, জব করে বা ব্যাবসা করে কম বেশি সবারই একি অবস্থা। সবাই ফ্যামিলিকে রেখে বিদেশে আছে। যদিও বা ব্যাবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের ফ্যামিলি নিয়ে বিদেশে বসবাস করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন রকম। বাকিদের অবস্থা কমবেশি একিরকম। সবাই ব্যাস্থ, কেউ ছুটি পাই না আবার কেউ ছুটি পেলেও কি করবে সে চিন্তা করেও ছুটি নিতে চাই না।

দেশে থাকতে আজিমপুর এলাকায় ছিলাম অনেক বছর, নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, গাউছিয়া, নীলক্ষেত, নুর জাহান মার্কেট বাসার আশেপাশে হওয়ায় বাহিরে বের হলেই অটোমেটিক ঈদের বাতাস শরীর অতিক্রম করে যেত। আশেপাশের সবাই ঈদের জামা কাপড় কেনাকাটা করা, ঈদের বাড়ি যাওয়ার টিকেট নিয়ে ব্যাস্থ থাকে। সেই প্রথম রোজা থেকে দীর্ঘ ১ মাস সেই আমেজ চলতে থাকে।

দক্ষিণ কোরিয়াতে ছুটির দিন শনিবার বা রবিবার ঈদ হলে তাও সবাই মিলে নামাজ পড়ে, দেখা সাক্ষাৎ হয় কিন্তু ওয়ার্কিং ডেতে ঈদ হলে প্রায় ৭০/৮০% মানুষের ক্লাস, ল্যাব বা জব থাকে। কিন্তু এই বছর ঈদ হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার বা বুধবার(দক্ষিণ কোরিয়ায়), তার মানে সবাই ব্যাস্থ থাকবে। ঈদ মানে আনন্দ কিন্তু প্রবাসীদের ঈদ হচ্ছে কষ্টের, বেদনার, যেখানে লুকিয়ে থাকে হাজারো কষ্ট, কাজ করতেছে ঈদের দিন অথচ দেশ থেকে কেউ ফোন দিলে অনেক সময় বাধ্য হয়ে বলতে হয় ঈদ উৎযাপন করলাম, সেমাই/পোলাও খাইলাম কিন্তু বাস্তবে….

উপরে বর্ণনা করা কথাগুলো আবেগী কিন্তু আমরা কি ঈদ উপলক্ষে আনন্দ করি না? আনন্দ করবো না? আমরা অবশ্যই আনন্দ করি বা করবো ঈদের পরবর্তী শনিবার/রবিবার নিজেদের ছোট ছোট বংলাদেশী কমিউনিটিগুলোর মধ্যে ঈদ উৎযাপন হয়ে থাকে বা করে থাকি। আর ফেসবুক’ত আছেই আমাদের ঈদের আনন্দ শেয়ার করার জন্য। (যদিওবা বিশাল একটা সংখ্যা ঈদের নামাজ, সেমাই/পোলাও খাওয়া বা কারো সাথে ঈদ উৎপাদন স্বপ্নের মধ্যে হয়ে থাকে)।

সবাই ভালো থাকবেন, অগ্রিম ঈদ মোবারক!

আল জাবের ফয়সাল, হানগুক ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজ, দক্ষিণ কোরিয়া।