
ধুরন্দর ছবির একটি দৃশ্যে অক্ষয় খান্না
বলিউড অভিনেতা রণবীর সিং ও অক্ষয় খান্না অভিনীত নতুন স্পাই থ্রিলার ছবি ‘ধুরন্ধর’ বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছে। পাশাপাশি দর্শক ও সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়াচ্ছে। যদিও এর ‘পাকিস্তান-বিরোধী’ বিষয়বস্তুর কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশে ছবিটি নিষিদ্ধ হয়েছে, যা এক ধরণের মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ট্রেড পোর্টাল স্যাকনিল্কের তথ্য অনুযায়ী, মুক্তির সপ্তম দিনে ‘ধুরন্ধর’ আয় করেছে ২৭ কোটি রুপি। এর ফলে ভারতে ছবিটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২০৭ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে। তিন দিন ধরে ছবির আয়ের অঙ্ক একই ছিল। পরপর তিন দিন ‘ধুরন্ধর’ ২৭ কোটি রুপি করে ব্যবসা করেছে। প্রথম সোমবারে যদিও আয় ৪৫ শতাংশের বেশি কমে গিয়েছিল কিন্তু পরদিনই আবার তা বেড়ে ১৬ শতাংশের বেশি লাফ দেয়। কর্মদিবস হওয়ায় সারা দিনে দর্শক কম থাকলেও রাতের শোগুলোতে দারুণ ভিড় দেখা যাচ্ছে। সকালের শোগুলোতে ১৮ শতাংশের বেশি দর্শক আসন পূর্ণ। রাতের শোগুলোতে তা বেড়ে প্রায় ৬০ শতাংশে পৌঁছে গেছে।
বিদেশি বাজার থেকেও সমান সাড়া পাচ্ছে ‘ধুরন্ধর’। প্রথম সপ্তাহে ছবিটি বিদেশে আয় করেছে প্রায় ৫৭ কোটি ৫ লাখ রুপি। সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩০৬ কোটি ২৫ লাখ রুপি। বিশ্বব্যাপী সংগ্রহের দিক থেকে ছবিটি ইতিমধ্যেই ‘সিতারে জমিন পর’, ‘থামা’, ‘সিকন্দর’ এবং ‘হাউসফুল ৫’-এর মতো ছবিকে পেছনে ফেলেছে।
কিন্তু ভারতের এই সাফল্যের মাঝেই বড় ধাক্কা এসেছে আন্তর্জাতিক বাজারে। মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বলিউড হাঙ্গামার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান-বিরোধী থিম’-এর অভিযোগে বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছবিটির মুক্তির অনুমতি দেওয়া হয়নি।
একটি সূত্র জানায়, এই দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ ছবিটির বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি তোলে। আগেও এমন রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল হিন্দি ছবিগুলো উপসাগরীয় অঞ্চলে মুক্তির ছাড়পত্র পায়নি। ‘ধুরন্ধর’-এর টিম চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত কোনো দেশই ছবিটির অনুমোদন করেনি।
নির্মাতা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অবশ্য দাবি করেছে, ‘ধুরন্ধর’ একটি স্পাই থ্রিলার, যার পটভূমি পাকিস্তান। গল্পটি আবর্তিত হয়েছে হামজা আলি মাজারি নামের এক রহস্যময় চরিত্রকে ঘিরে, যিনি লিয়ারি অঞ্চলের কুখ্যাত রহমান ডাকাতের গ্যাংয়ে অনুপ্রবেশ করেন। ছবিতে রণবীর সিং ছাড়াও অক্ষয় খান্না, অর্জুন রামপাল, আর. মাধবন এবং সারা অর্জুন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা পেলেও সমালোচকদের কাছ থেকে ছবিটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। রিভিউ ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে কড়া অবস্থান নিয়েছে ফিল্ম ক্রিটিক্স গিল্ড। তারা এক বিবৃতিতে সমালোচকদের ওপর ‘হামলা, হয়রানি ও ঘৃণা’ ছড়ানোর প্রবণতার নিন্দা জানিয়েছে।
সত্য ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত এই ছবিতে সংসদ বিস্ফোরণ, মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল হামলা ও বিমান ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে। শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, ছবিটি মেজর মোহিত শর্মার জীবনী থেকে অনুপ্রাণিত, তবে পরিচালক আদিত্য ধর তা নাকচ করেছেন। সব মিলিয়ে, ভারতে বক্স অফিসে রেকর্ড গড়লেও মধ্যপ্রাচ্যে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে ‘ধুরন্ধর’ এখন একই সঙ্গে সাফল্য ও বিতর্কের কেন্দ্রে।









































