
সেই রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ উপাত্ত হাজির করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা
আদিলগ্নে পৃথিবীটা ছিল উত্তপ্ত ম্যাগমার গোলক পিণ্ড। এরপর একদিন তাতে দেখা যায় বিপুল পরিমাণ জলরাশি এসে হাজির। তৈরি হয় সাগর-মহাসাগর। শীতল হতে হতে এক পর্যায়ে জীবনধারণের উপযোগী হয়ে যায় গ্রহটি। কিন্তু জন্মলগ্ন থেকে কীভাবে বিপুল পরিমাণ পানি পৃথিবীর ভেতরে সঞ্চিত ছিল—প্রশ্নটির শতভাগ উত্তর জানা নেই কারও। এবার সেই রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ উপাত্ত হাজির করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশ হয় এ গবেষণার বৃত্তান্ত।
চীনা বিজ্ঞান একাডেমির অধীন কুয়াংচৌ ইনস্টিটিউট অব জিওকেমিস্ট্রির গবেষকরা পরীক্ষাগারে দেখিয়েছেন, চারশ কোটি বছরেরও আগে পৃথিবীর গভীর ম্যান্টল স্তরটিই বিশাল জলাধারের ভূমিকা পালন করতে পারে। এ গবেষণার কেন্দ্রে আছে ব্রিজম্যানাইট নামের একটি খনিজ। পৃথিবীর নিম্ন ম্যান্টলে যা বিপুল পরিমাণে জমা আছে।
আগে ধারণা করা হতো এ খনিজের পানি সংরক্ষণের ক্ষমতা সীমিত। কিন্তু চীনা গবেষকদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খনিজটির পানিকে আটকে রাখার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
বিজ্ঞানীরা ‘ডায়মন্ড আনভিল সেল’ নামের একটি বিশেষ চাপ তৈরির যন্ত্র এবং লেজার হিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিম্ন ম্যান্টলের চরম পরিবেশের সিমুলেশন তৈরি করেন। ব্রিজম্যানাইটের ওপর প্রচণ্ড চাপ ও ৪,১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা তৈরি করে দেখা যায় এক বিস্ময়কর বৈপরীত্য—পরিবেশ যতই গরম হয়েছে, ব্রিজম্যানাইট তত বেশি পানির কণা ধারণ করতে পেরেছে।
গবেষকরা ধারণা করছেন, এই প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর ম্যান্টলের কঠিন স্তরে যে পরিমাণ পানি জমে ছিল তা বর্তমান পৃথিবীর সমুদ্রগুলোর মোট পানির সমান হতে পারে। আর এই সুপ্রাচীন জলভান্ডারই কোটি কোটি বছর ধরে অগ্নুৎপাতের মাধ্যমে ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে এসে তৈরি করেছে সাগর, নদী ও মেরুর বরফ।
সূত্র: সিএমজি






































