শুক্রবার । ডিসেম্বর ১২, ২০২৫
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ওমান প্রবাসী সঞ্জীবের এমন মৃত্যু মানতে পারছে না কেউ


sonjib-oman

নিহত সঞ্জীব দাশ। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার শিলক ইউনিয়নের সঞ্জীব দাশ (৪৩) মারা গেছেন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আল খয়ের এলাকায় ঘটে এ দুর্ঘটনা। শান্ত, পরোপকারী আর দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে পরিচিত সঞ্জীবের অকালমৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবার ও এলাকায়।

নিহত সঞ্জীব দাশ উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড নটুয়ারটিলা দাশপাড়ার লাল মোহন দাশের ছেলে। পেছনে রেখে গেছেন বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান। প্রিয় মানুষটির এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

ওমানের একই এলাকায় থাকা প্রবাসী মো. ওবায়দুল হক জানান, অনেক বছর ধরে ফ্রি ভিসায় ওমানে কঠোর পরিশ্রম করতেন সঞ্জীব। কাজের ডাকে সাইকেল চালিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছুটে যেতেন। সোমবার বেলা ১২টার পর তিনি সাইকেল চালিয়ে কাজ থেকে ফিরছিলেন। এসময় দ্রুতগামী একটি স্কুল বাস তাকে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে গিয়ে পাশের সড়ক ওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খান। এতে তার মাথা থেঁতলে যায় এবং ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, “সঞ্জীব ভাই খুব শান্ত, হাসিখুশি ও পরোপকারী মানুষ ছিলেন। নিজের কষ্টের কথা কখনো কারও কাছে বলতেন না। সাইকেল চালিয়ে দিনভর কাজ করেও হাসিমুখেই থাকতেন। তার এ মৃত্যু আমরা কেউই মেনে নিতে পারছি না।”

বর্তমানে সঞ্জীবের মরদেহ স্থানীয় একটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মাস আগে ছুটি কাটিয়ে দেশে গিয়েছিলেন সঞ্জীব। মা হারানোর শোক কাটিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে আবারও বিদেশে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। মাত্র এক মাস আগে সঞ্জীবের জন্য গ্রামের অপর এক প্রবাসী আবদুল সবুরের মাধ্যমে রান্না করা খাবার পাঠিয়েছিল তার পরিবার। কে জানতো, এটাই ছিলো তার পরিবারের পাঠানো তার শেষ খাবার।

সঞ্জীবের মৃত্যুতে নটুয়ারটিলা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিবেশী ও পরিচিতজনরা বলছেন—সঞ্জীব ছিলেন শান্তস্বভাবের, পরোপকারী ও সবার আন্তরিক আপনজন। এমন ভালো মানুষের হঠাৎ মৃত্যুকে কেউই মেনে নিতে পারছেন না।