
রাজশাহীর তানোরে দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।
রাজশাহীর তানোরে দুই বছরের শিশু সাজিদকে ঘিরে পুরো গ্রামজুড়ে টান টান উত্তেজনা। গভীর নলকূপের পাইপে আটকে পড়ার ২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের ধানখড়ের মাঠে খেলতে গিয়ে হঠাৎ প্রায় ৪০ ফুট গভীর একটি পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। মাত্র ৮ ইঞ্চি ব্যাসের সেই সরু গর্তে পড়ে যাওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পরিবার ও এলাকাবাসীর।
শিশুটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট কাজ করছে। তবে মাটির গঠন ও গর্তের সরু ব্যাসের কারণে সরাসরি উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস জানায়, প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁরা নানা পদ্ধতিতে চেষ্টা করলেও বিপজ্জনক পরিস্থিতির কারণে এক্সাভেটর ছাড়া উদ্ধার সম্ভব নয় বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়।
কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়ে উদ্ধারকর্মীরা— তানোর উপজেলায় একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এক্সাভেটরও পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাত ৮টার দিকে পাশের মোহনপুর উপজেলা থেকে ছোট দুইটি এক্সাভেটর এনে খননকাজ শুরু হয়। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে একটি হাই-পাওয়ার এক্সাভেটর আসে এবং দ্রুত মাটি সরানোর কাজ ত্বরান্বিত হয়।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় ৪০ ফুট গর্ত করা শেষ হয়। এরপর সেই গর্ত থেকে শিশুটি যে গর্তের মধ্যে পড়ে যায় সেদিকে সুরঙ্গ খোঁড়া শুরু করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা থেকে সেই সুরঙ্গ খোঁড়া চলছে তবে এখন পর্যন্ত শিশুটির দেখা মেলেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ— প্রশাসনের গাফিলতি ও ধীর প্রতিক্রিয়ার কারণেই উদ্ধার তৎপরতা দেরিতে শুরু হয়েছে। তাদের দাবি, শিশুটি বিকেলেই হয়তো উদ্ধার করা যেত যদি জরুরি ভিত্তিতে বড় এক্সাভেটর আনা হতো।
তানোর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রউফ বলেন, “শুরুর দিকে তানোরে কোথাও এক্সাভেটর পাওয়া যায়নি। মোহনপুর থেকে দুটি এনে কাজ শুরু করি। এরপর বড় এক্সাভেটর দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমরা ৪০ ফুট গর্ত করেছি। সেই গর্ত থেকেই শিশুটি যে গর্তে পড়েছে সেদিকে সুরঙ্গ করা হচ্ছে। আমরা এখনো শিশুটির দেখা পাইনি। তবে শিশুটিকে না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের উদ্ধার অভিযান চলবে। আশা করছি আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।”
সাজিদের জীবিত অবস্থার বিষয়ে এখনো কিছু নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ জারি আছে এবং উদ্ধার অভিযান চলছে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিয়ে।





































