Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আইফোন এক্স সম্পর্কে যে ১৩টি তথ্য আপনার জানা দরকার

I phone Xমার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল তাদের উদ্ভাবিত আইফোনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাজারে এনেছে আইফোন এক্স। অ্যাপলের ১০ বছর পূর্তি স্মরণীয় করে রাখতেই সম্ভবত ফোনটির নাম ‘এক্স’, অর্থাৎ রোমান সংখ্যায় ১০। অ্যাপলের দাবি, এই ‘এক্স’ মডেলটি এখনো পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ আইফোন।

এ ছাড়া এ পর্যন্ত যত ফোন বাজারে এনেছে অ্যাপল তার মধ্যে এটিই তাদের সবচেয়ে দামি আইফোন। এর ৬৪ জিবি মডেলটির দাম ৯৯৯ ডলার। আর ২৫৬ জিবি মডেলের দাম ১১৪৯ ডলার (প্রায় ১ লাখ টাকা)।

chardike-ad

অ্যাপলের সিইও টিম কুক বলেছেন, এই আইফোনটি স্মার্টফোনের জগতে আরেকটি নতুন যুগের সূচনা করবে যেমন করে ১০ বছর আগে প্রথম আইফোন একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

আসুন জেনে নেওয়া যাক এর অনন্য ১৩টি বৈশিষ্ট্য।

১. ওএলইডি ডিসপ্লে
১২ সেপ্টেম্বর তিনটি নতুন আইফোন বাজারে ছেড়েছে- আইফোন ৮, আইফোন ৮ প্লাস এবং আইফোন এক্স। এর মধ্যে শুধু আইফোন এক্স এর ডিসপ্লেটাই ৫.৮ ইঞ্চির ওএলইডি ডিসপ্লে। এর রেজ্যুলেশনও অ্যাপলের ফোনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ- ২৪৩৬x১১২৫ পিক্সেল।

প্রতিইঞ্চিতে এর ঘনত্ব ৪৫৮ পিক্সেল (পিপিআই)। অ্যাপল এর নাম দিয়েছে সুপার রেটিনা ডিসপ্লে। এই হাই ডেফিনেশন (এইচডিআর) ডিসপ্লেতে আরো আছে ডলবি ভিশন এবং এইচডিআর১০।
২. পুরোপুরি গ্লাস এবং স্টেইনলেস স্টিল বডি
অ্যাপল আইফোন এক্স পুরোপুরি গ্লাস এবং স্টেইনলেস স্টিলের বডিসহ এসেছে। সবচেয়ে টেকসই গ্লাস এতে লাগানো হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যাপল। যাকে ঘিরে আছে অত্যন্ত মসৃণ সার্জিকাল গ্রেডের স্টেইনলেস স্টিলের ব্যান্ড। রয়েছে সাত স্তরের কালার প্রসেসিং এবং একটি রিফ্লেকটিভ অপটিকাল লেয়ার। আর স্ক্রিনটি ধুলো-ময়লা এবং পানিনিরোধকও বটে। ফলে ডিজাইনটি যেমন টেকসই তেমনই অসাধারণ অভিজাতও হয়েছে।

৩. প্রান্তজুড়ে পর্দা
হোম বাটন সরিয়ে ফেলার ফলে আইফোন এখন প্রান্ত থেকে প্রান্ত পর্যন্ত ডিসপ্লে রাখতে পারছে। আইফোনের পর্দা পুরো মোবাইলজুড়ে থাকছে। আইফোন হবে পানি নিরোধক। বড় পর্দার কারণে এখন ফোনে ভিডিও দেখা আরও উপভোগ্য হবে ব্যবহারকারীদের জন্য।

৪. হোমবাটন নেই
ফোনটির আগাগোড়া ডিসপ্লে। ফলে এতে কোনো হোমবাটন নেই। ফোনটিকে জাগিয়ে তোলার জন্য শুধু ছুঁয়ে দিলেই হবে।

৫. ফেস আইডি
এতে কোনো ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর নেই। টাচ আইডির জায়গায় ফেস আইডি লাগানো হয়েছে। ফেস আইডিতে ছবি তুলে রাখতে হবে। এরপর ফোনটি আনলক করার জন্য মুখের সামনে ধরলেই খুলে যাবে। আইফোন ক্যামেরা দিয়ে ব্যবহারকারীকে চিনে নেবে। আর এটি আরো বেশি নিরাপদ।

আঙুলের ছাপ বদলায় না, চেহারা তো বদলায়। তাতেও অসুবিধা নেই। আইফোন প্রতিদিন তার ব্যবহারকারীর চেহারার পরিবর্তন খেয়াল রাখবে। ফলে আপনার দাঁড়ি গজাল, চেহারায় কোনো পরিবর্ত এলো, সমস্যা নেই। আইফোন ঠিক চিনে নেবে। দিনের পাশাপাশি রাতেও সে ব্যবহারকারীকে চিনতে পারবে।

অ্যাপল জানিয়েছে, আঙুলের ছাপ সুরক্ষাব্যবস্থা একেবারেই নিখুঁত নয়। আঙুলের ছাপ দিতে থাকলে প্রতি ৫০ হাজার জনের মধ্যে একজনের ছাপ মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফেস আইডিতে যেটি প্রতি ১০ লাখে একজন।
৬. তারহীন চার্জিং
ইয়ারফোন আর চার্জারের তার দুটিই ব্যবহারকারীদের জন্য যন্ত্রণার কারণ হয়ে যায়। ইয়ারফোনের তারের প্যাঁচ তো রীতিমতো বিরক্তিকর। আবার কখনো কখনো চার্জারের কেব্‌ল খুঁজে পাওয়া যায় না। এই ঝামেলা থেকে মুক্তি মিলছে এবার। তার লাগিয়ে চার্জ দিতে হবে না, গানও শুনতে জ্যাকপিন ঢোকাতে হবে না। দুটিই এখন তারহীন প্রযুক্তিতে চলবে। চার্জারের প্যাডে ফোন রেখে দিলে চার্জ হতে শুরু করবে। কানে শুধু ইয়ারফোনের মাথা দুটি ঢোকালেই হবে।

৭. দুটি ভ্যারিয়েন্ট
৬৪জিবি এবং ২৫৬ জিবির দুটি ভ্যারিয়েন্ট আবার দুটি রংয়ে এসেছে- সিলভার এবং স্পেস গ্রে।

৮. ডুয়াল ক্যামেরা
পেছনে ডুয়াল ক্যামেরার সেটআপ আছে। দুটি রিয়ার ক্যামেরাই ১২এমপি এবং অপটিকাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন (ওআইএস) সাপোর্ট আছে। একটি ক্যামেরার অ্যাপারচার এফ/১.৮। আর অন্যটির অ্যাপারচার এফ/২.৪। এতে আরো আছে ৪কে ভিডিও রেকর্ডিং, নতুন কোয়াড এলইডি ট্রু টোন ফ্ল্যাশ, সাথে স্লো সিঙ্ক। ফ্রন্ট ক্যামেরাটি ৭এমপি ট্রুডেপথ ক্যামেরা। ফেসআইডি চেনার জন্য অ্যাপল এই ক্যামেরাটি বিশেষভাবে তৈরি করেছে।

৯. এ১১ প্রসেসর
অ্যাপলের একেবারে নতুন উদ্ভাবিত এ১১ বায়োনিক চিপসেট দিয়ে চালিত হবে এই ফোন। এর আছে সিক্স-কোর সিপিউ ডিজাইন। অ্যাপলের দাবি আইফোনের ৭ এর চেয়ে তার নতুন তিনটি ফোনেরই ব্যাটারির স্থায়িত্ব আরো দুই ঘণ্টা বেশি।

১০. প্রি অর্ডার শুরু ২৭ অক্টোবর, দোকানে বিক্রি শুরু ৩ নভেম্বর
২৭ অক্টোবর থেকে বিশ্বের ৫৫টি দেশে এর প্রি অর্ডার শুরু হবে। এর বাংলাদেশ নেই। ভারত আছে। এবারই প্রথম অ্যাপল এর কোনো নতুন আইফোন প্রথম পর্যায়েই ভারতে বিক্রি শুরু হল। ফোনটি খুচরা দোকানের শেলফে আসবে ৩ নভেম্বর থেকে।

১১. দুটি রংয়ে আসছে
দুটি ভিন্ন রংয়ে আসছে ফোনটি- সিলভার এবং স্পেস গ্রে। এটি ওয়াটার এবং ডাস্ট রেসিসটেন্সও বটে। এতে অ্যাপলের আইপ্যাড প্রোর মতোই ট্রু টোন ফিচার থাকবে।

১২. প্রাণবন্ত ইমোজি
ইমোজিকে প্রাণ দিচ্ছে আইফোন। আপনি যেভাবে কথা বলবেন, আপনার নির্দিষ্ট করা ইমোজিও একই ভঙ্গিতে কথা বলবে। শুধু তা-ই নয়, আপনি রাগ হলে, ইমোজিও রাগ হবে। খুশি হলে খুশি। ইমোজি এখন শুধু স্থির আইকন থাকছে না। বেশ মজার হয়ে উঠছে।

১৩. ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফি
আইফোন বিশেষভাবে জনপ্রিয় এর ক্যামেরা ও আলোকচিত্র প্রযুক্তির কারণে। এখন এটি আরও উন্নত ও আধুনিক হয়ে উঠছে। বিশেষ সুবিধার মধ্যে থাকছে আলো নিয়ন্ত্রণ। একদম স্টুডিও লাইটিংয়ের সব সুবিধা থাকবে আইফোনে। ফ্রন্ট ও ব্যাক ক্যামেরা দুটিতেই থাকছে পোর্ট্রেট সুবিধা। পেছনের ডুয়াল ক্যামেরা হয়ে উঠছে অনেক বেশি আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয়। ছবি তোলার আগে অবজেক্টের মোশন ও অবস্থা বুঝে আইফোন ছবি তুলবে। ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীরা পেশাদার আলোকচিত্রীদের মতো ছবি তুলতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, ক্যামেরায় ব্যবহার করা হচ্ছে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি। বন্ধুদের আড্ডার ছবি বা ভিডিও তোলার সময় ওর মধ্যেই আপনি নামিয়ে দিতে পারবেন ধম ধম শব্দ করে হেঁটে চলা ডাইনোসর! এসব প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের নির্মাতা করে তুলতেও সাহায্য করবে।