
ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়ায় প্রথমবারের মতো শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ সরকারি নিবন্ধন কর্মসূচি চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের বায়োমেট্রিকসহ সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করবে দেশটির সরকার।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টে ডেপুটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি ড. শামসুল আনুয়ার নাসারাহ জানান, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের নির্দেশিকা নং ২৩ অনুযায়ী তৈরি নতুন রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো শরণার্থীদের জন্য একটি সরকারি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা হবে।
ড. শামসুল বলেন, এতদিন মালয়েশিয়ায় শরণার্থীদের তথ্য পরিচালনা করত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)। কিন্তু নতুন ডাটাবেজ চালু হলে এসব তথ্য সামাজিক সহায়তা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা পরিকল্পনা এবং জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
তার ভাষায়, শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকবে ইমিগ্রেশন বিভাগ। তবে নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিলে শরণার্থী মর্যাদার আবেদন বাতিল করার ক্ষমতাও থাকবে সরকারের কাছে।
এ সময় সংসদ সদস্য আহমাদ তারমিজি সুলায়মান প্রশ্ন করেন, সরকার কি জাতিসংঘের বিদ্যমান ডাটাবেজ ব্যবহার করবে, নাকি আলাদা ডাটাবেজ তৈরি করবে। উত্তরে ড. শামসুল জানান, মাইমোস বেরহাদ-এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় সরকারের নিজস্ব ডাটাবেজ ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট এনজিওদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার কাছে এতদিন শরণার্থীদের বয়স, লিঙ্গ, উৎপত্তিস্থান বা প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কিত কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য ছিল না। তাই নতুন তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে যা যা করা হচ্ছে— নিবন্ধন ব্যবস্থার পরীক্ষামূলক ব্যবহার, পেরাকের বিদরে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী পৃথকীকরণ কেন্দ্র স্থাপন, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নিবন্ধন ও শরণার্থী মর্যাদা নির্ধারণের এসওপি চূড়ান্তকরণ, সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন বিধিমালায় সংশোধন সম্পন্ন করা।
নিবন্ধনের পর শরণার্থীদের হাতে দেওয়া হবে ‘রেফিউজি রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট (ডি-পি-পি)’, যার মাধ্যমে তারা উপদ্বীপীয় মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে বসবাস, কাজ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
সরকার জানিয়েছে, মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন ও ১৯৬৭ প্রটোকলে স্বাক্ষরকারী না হওয়ায় বর্তমানে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন। তবে নতুন ডিপিপি ব্যবস্থা চালু হলে প্রায় ২ লাখ শরণার্থী এই ডাটাবেজের আওতায় আসতে পারে। যদিও সঠিক সংখ্যা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
এদিকে শ্রম অনুমতি, ফি এবং অন্যান্য নীতি-সংক্রান্ত বিষয় এখনো মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ বিবেচনা করছে।








































